আত্মগঠন ও মানোন্নয়ন

 

আত্মগঠন কি?

-আত্মগঠন মানে নিজেকে গড়া, Build yoursef

-এটি একজন মানুষের প্রথম কাজ

-সক্রেটিস বলেন, 'Know the self'

-আরবী প্রবাদ, 'মান আরাফা নাফসাহু ফাকাদ আরাফা রাব্বাহু'

-লালন ফকির, 'একবার আপনারে চিনতে পারলে রে, যাবে অচেনারে চেনা...

-সুরা রাদে, 'ইন্নাল্লাহা লা ইয়ু গাইয়িরু....

-কবি মল্লিক, 'নিজেকে চেনার তুমি তাওফিক দাও খোদা....

-নিজেকে গঠন অনেক কঠিন কাজ

-হেলাল হাফিজ, 'ধূসর মরুর ঊষর বুক বিশাল...'

-যেমন, আত্মগঠনের একটা মাধ্যম তাহাজ্জুদ, যার ব্যাপারে আল্লাহ বলেছেন, ইন্না নাশিয়াতাল্লাই...'

আরো বলেছেন, 'ওইন্নাহু লা কাবিরাতুন...'

-কবি মল্লিক,  'হঠাৎ করে জীবন দেয়া...'



আত্মগঠনের পূর্বশর্তঃ

১. নিজেকে ভেঙ্গে আবার গড়া (দর্জি জামা 

 সেলাই ও বিল্ডিংয়ের এমারত তৈরির মতো, এদেশের আকাশে বাতাসে)

২. সিদ্ধান্তবদ্ধ হওয়া (আল্লাযিনা জাহাদু ফি না...ইরান সম্রাজ্য বিজয়...সুরা রুম নাযিল আর রোমানদের পরাজয়)

৩. আল্লাহর তাওফিক (ওমাইয়ুদ লিল্লাহু ফালা...ইন্নাকা লা তাহদি...ওলাকা আতাইনা লুকমানা...নাহনু নাকুসসু আলাইকা...)

৪. একটি নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণ (যেকোন জিনিস পরিচালনার একটা ম্যানুয়াল থাকে, পদ্ধতি ক্রমান্বয়ে অনুসরণ না করলে লক্ষ্যে পৌছানো যায় না)

৫. কষ্ট সহিষ্ণুতা (বাবুই হাসিয়া কহে সন্দেহ কি...আমার গৌরব তাতে...প্রাণ যায় তবু কেউ...আঘাতে আঘাতে যারা দিয়েছিল...)



আত্মগঠনের ভিত্তিঃ

১. কুরআনের নির্দেশনা 

২. রাসুলুল্লাহ (স.) এর তরিকা

৩. যুগে যুগে ইসলামী আন্দোলনের শিক্ষা


আত্মগঠনের প্রয়োজনীয়তাঃ

১. জীবনের মানে খুঁজে পাওয়া যায় (আফা হাসিবতুম আন্নামা...ইন্নি জালিলু ফিল আরদি খলিফা/plitical word,উখরিজাত লিন্নাস)

২. নিজেকে সংশোধিত করা যায় (ত্রুটি দূর করা, নিজের দূর্বলতা চিহ্নিত করে কাটানো, নতুন অভ্যাস তৈরি)

৩. নিজেকে প্রতিদিন আরো অগ্রসর করা যায় (মুমিনের প্রতিটি  দিনই নতুন/Everyday is brand new Start, ধ্বংস তার জন্য যার...)

৪. পার্থিব মোহ থেকে রক্ষা পাওয়া যায় (মান আহাব্বাদ দুনিয়া....আবু বকরের গুণ হলো: জাহিদান ফিদ্দুনিয়া....ওমাল হায়াতিদ দুনিয়া...শেখ সাদীর দুরিয়াকে স্বপ্ন দেখা)

৫. পরকালীন জীবনের সফলতাকে টার্গেট করা (জালিকাল ফাওযুল আজিম/কাবির...ওল্লাহু ইনদাহু হুসনুল...)

৬. এক অপরিসীম আধ্যাত্মিত শক্তি পাওয়া যায় (মৃত্যুকে যে কঠিন হৃদয় করলো বিজয়....মে ইস বাতিল কো হুকুমত কি সামনে...ফাঁসির কথা শুনে সাইয়েদ কুতুব হেসে দিলেন)



আত্মগঠনের পদ্ধতিঃ

১. নিজের বর্তমান মান পর্যালোচনা করা।

২. কুরআন হাদিসের আলোকে দূর্বলতাহুলো চিহ্নিত করা।

৩. দূর্বলতাগুলো কাটানোর চেষ্টা করা।

৪. নতুন অভ্যাস তৈরি করা (শরীরের নাম মহাশয়)

৫. নতুন জীবনের উপর মৃত্যু পর্যন্ত চলার দৃঢ় সিদ্ধান্তবদ্ধ হওয়া।


☞পদ্ধতিগুলো অনুসরণের একটি যথাযথ মাধ্যম হলো মানোন্নয়ন। 

☞অন্যভাবে বললে, আত্মগঠনের প্রয়োজনেই মনোন্নয়ন।

☞মানোন্নয়ন না হলে আত্মগঠন পূর্ণতা লাভ করতে পারে না।


মনোন্নয়ন কি?

মানোন্নয়ন মানে Improvement

অর্থাৎ নিজের বর্তমান মানকে আরো উন্নত করা যথাযথ পন্থা অবলম্বন করা।

পরিক্ষায় আমরা অনেক সময় Improvement দিয়ে থাকি।


☞মানোন্নয়ন মানসংরক্ষণের সহায়ক এবং মান অবনতির পথে প্রতিবন্ধক।

☞মানোন্নয়ন না করলে পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন পদার্থ লোহাতেও মরিচা ধরে।

☞মানোন্নয়ন নিজেকে জান্নাতমুখী করে আর মান অবনতি জাহান্নামীদের লক্ষণ (ওলা ইয়াহসাবা...)


মানোন্নয়নের প্রক্রিয়াঃ

১. ব্যক্তিগত রিপোর্ট সংরক্ষণ 

২. মৌলিক ইবাদত পালন

৩. অধ্যয়ন (কুরআন, হাদিস, সাহিত্য)

৪. সাংগঠনিক কার্যকম (বৃদ্ধি, যোগাযোগ)

৫. নোট ও মুখস্ত পদ্ধতি 

৬. হাতে কলমে, ময়দানে শিখা

৭. ইতিহাস ঐতিহ্য জানা (ত্যাগ-কুরবানী)

৮. মনের মধ্যে থাকা সন্দেহ দূর করা

৯. ইখলাস ঠিক করা (আল্লাহর সন্তুষ্টি)

১০. ক্যারিয়ার ও আন্দোলনের সমন্বয় বুঝা


মানোন্নয়ন না করার পরিণামঃ

১. জীবন উদ্দেশ্যহীন পরিচালিত হবে।

২. পরকালীন জীবন নষ্ট হয়ে যাবে।

৩. দুনিয়ার মোহে পড়ে যাবে।

৪. এক সময় আন্দোলনের কাজ অর্থহীন মনে হবে

৫. নিজের মেধা ও যোগ্যতা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত হবে


মানোন্নয়নে সতর্কতাঃ

১. লোক দেখানো দুনিয়াবি স্বার্থে মানোন্নয়ন না করা  (হাদিসে এদেরকে জাহান্নামী বলা হয়েছে)

২. নিজের নৈতিক দূর্বলতা লুকিয়ে রেখে মানোন্নয়ন না করা (পর্দা, লেনদেন, অধ্যয়ন)

৩. অস্পষটা রেখে মানোন্নয়ন না করা ('৭১ ইস্যু, আকীদা, মাওলানা মওদুদী)

৪. পরিবারের একেবারে অলক্ষ্যে মানোন্নয়ন না করা।

৫. প্রতিকূলতা, ত্যাগ-কুরবানীর বিষয়ে ধারনা না রেখে মানোন্নয়ন না করা। 


সর্বশেষ পোস্ট

যুগে যুগে ইসলামী আন্দোলনের ইতিহাস

ভূমিকা: ইসলামী আন্দোলন শুধু যুগ যুগ ধরে নয়। এ আন্দোলন শতাব্দী থেকে শতাব্দী ধরে। এ আন্দোলন হাজার বছরের আন্দোলন। ঈসা আঃ এর আগমনের প্রায় ৬০০ বছ...

জনপ্রিয় পোস্ট