ভূমিকা:
- ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের যত প্রশক্ষিণ তার মূল টার্গেট তাকওয়া।
- সকল ইবাদতে মৌলিক উদ্দেশ্যও তাই।
- মানোন্নয়নের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাকওয়া অর্জন শুরু হয় (আয়াত-হাদীস মুখস্ত)।
- তাকওয়া অর্জনের পথে অন্তরায় এমন সামান্য ব্যাপরকেও সংগঠন ছাড় দেয় না (ছাত্রী টিউশনি, নাটক-সিনেমা, জাস্ট ফ্রেন্ড, ছাত্র/ছাত্রী সংগঠনের স্বতন্ত্র ব্যবস্থা)।
- তাকওয়ার গুণান্বিত ব্যক্তিরাই সংগঠনের আগামীর রাহী, নকীব, রাহবার।
- তাকওয়া র্অজনের পিছিয়ে পড়া ব্যক্তি প্রতিলকূলতার মোকাবেলায় হাঁফিয়ে উঠে।
- দায়িত্বশীলদের মধ্যে যারা লিডারশীপ বাছাইয়ের মানদন্ড হিসেবে তাকওয়াকে গ্রহণ না করে স্বজনপ্রীতিকে গ্রহন করলেন, তিনি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিলেন।
তাকওয়া কি?
- তাকওয়া (تقوى) অর্থ বিরত থাকা, বেঁচে থাকা, নিষ্কৃতি লাভ করা, ভয় করা, নিজেকে রক্ষা করা।
- সর্বাবস্থায় আল্লাহ তা’য়ালাকে ভয় করে হারাম থেকে বেঁচে থাকা এবং তাঁর হুকুম-আহকাম মেনে চলাই হল তাকওয়া।
- সকল প্রকার হারাম থেকে নিজেকে রক্ষা করে কুরআন সুন্নাহ মোতাবেক জীবন পরিচালনা করাকে তাকওয়া বলা হয়।
- ইবনে আব্বাস রা: এর ভাষায়, "আল্লাহর সাথে শিরক পরিহার করে এবং তাঁর আনুগত্যে কাজ করা।’’
- "তাকওয়া" শব্দটিوقى ক্রিয়া থেকে নির্গত, যার অর্থ আত্মরক্ষা, সংরক্ষণ, সুরক্ষা, ঢাল ইত্যাদি।
- সূরা লাইল এর ৮ নং আয়াত অনুযায়ী, তাকওয়ার বিপরীত হলো ইস্তিগনাহ اسْتِغْنَاء)) যার অর্থ আল্লাহর সীমা থেকে মুক্ত হওয়া, বেপরোয়া আচরণ করা, বাড়াবাড়ি করা, সীমালঙ্ঘন করা, দুঃসাহস দেখানো, দায়িত্ব পালনে অবহেলা করা ইত্যাদি।
তাকওয়ার প্রয়োজনীয়তা:
আল কুরআনের আলোকে:
- তাকওয়া" শব্দটি কুরআনে ১০০ বারের বেশি ব্যবহৃত হয়েছে।
- ‘‘অক্সফোর্ড ডিকশনারি অফ ইসলাম’’ অনুসারে, ‘তাকওয়া’ শব্দটি এবং এর থেকে উৎপন্ন শব্দসমূহ ২৫০ বারের বেশি আছে।
- কুরআনুল কারীমের প্রায় ২৭ স্থানে তাকওয়াবান বা মুত্তাকীদের জন্য সুসংবাদ উল্লেখিত হয়েছে। তার মধ্য থেকে কয়েকটি উল্লেখ করা হলো:
১. তাকওয়া অর্জনকারী হেদায়াত আলোয় আলোকিত:
ذٰلِكَ الۡكِتٰبُ لَا رَیۡبَ ۚ فِیۡهِ هُدًی لِّلۡمُتَّقِیۡنَ
এই সেই কিতাব, যাতে কোন সন্দেহ নেই, মুত্তাকীদের জন্য হিদায়াত (বাকারা:২)
২. তাকওয়া অর্জনকারী আল্লাহর বাচাইয়ে শ্রেষ্ঠতম:
اِنَّ اَكۡرَمَكُمۡ عِنۡدَ اللّٰهِ اَتۡقٰكُمۡ
তোমাদের মধ্যে আল্লাহর কাছে সেই অধিক মর্যাদাসম্পন্ন যে তোমাদের মধ্যে অধিক তাকওয়া সম্পন্ন (হুজুরাত: ১৩)
৩. তাকওয়া অর্জনের তা আবার যাছাই করতে হবে:
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللّٰهَ حَقَّ تُقٰتِهٖ وَ لَا تَمُوۡتُنَّ اِلَّا وَ اَنۡتُمۡ مُّسۡلِمُوۡنَ
হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যথাযথ ভয়। আর তোমরা মুসলমান হওয়া ছাড়া মারা যেও না। (আলে ইমরান: ১০২)
৪. তাকওয়া অর্জনের জন্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেষ্টা করতে হবে:
اتَّقُوا اللّٰهَ مَا اسۡتَطَعۡتُمۡ
তোমারা আল্লাহর ভয় (তাকওয়া) অর্জন করো তোেদর সাধ্য অনুযায়ী (তাগাবুন: ১৬)
৫. মুত্তাকীদের লক্ষ্য দুনিয়া নয়; আখিরাত:
قُلۡ مَتَاعُ الدُّنۡیَا قَلِیۡلٌ ۚ وَ الۡاٰخِرَۃُ خَیۡرٌ لِّمَنِ اتَّقٰی
বল, ‘দুনিয়ার সুখ সামান্য। আর যে তাকওয়া অবলম্বন করে তার জন্য আখিরাত উত্তম।’ (নিসা: ৭৭)
৬. মুত্তাকীদের রিজিকের কোন চিন্তা নেই:
وَّ یَرۡزُقۡهُ مِنۡ حَیۡثُ لَا یَحۡتَسِبُ وَ مَنۡ یَّتَّقِ اللّٰهَ یَجۡعَلۡ لَّهٗ مَخۡرَجًا ۙ﴿۲
যে আল্লাহকে ভয় করে, তিনি তার জন্য উত্তরণের পথ তৈরী করে দেন। এবং তিনি তাকে এমন উৎস থেকে রিযক দিবেন যা সে কল্পনাও করতে পারবে না। (ত্বালাক:২-৩)
৭. তার দুনিয়া ও আখিরাতে পথচলা সহজ হয়ে যাবে:
وَ صَدَّقَ بِالۡحُسۡنٰی ﴿﴾فَسَنُیَسِّرُهٗ لِلۡیُسۡرٰی ۙ﴿﴾فَاَمَّا مَنۡ اَعۡطٰی وَ اتَّقٰی
যে দান করে, তাকওয়া অবলম্বন করে আর সত্যকে সত্য বলে বিশ্বাস করে। আমি তার জন্য সহজ পথ চলা সুগম করে দেব। (লাইল; ৫-৭)
৮. মুত্তাকীদের জন্য তিনটি মহান পুরষ্কার:
اتَّقُوا اللّٰهَ یَجۡعَلۡ لَّكُمۡ فُرۡقَانًا وَّ یُكَفِّرۡ عَنۡكُمۡ سَیِّاٰتِكُمۡ وَ یَغۡفِرۡ لَكُم
যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর তাহলে তিনি তোমাদের জন্য ফুরকান প্রদান করবেন, তোমাদের পাপসমূহ দূর করবেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন। (আনফাল: ২৯)
৯. তারা আল্লাহর রহমাতের ছায়াতলে থাকে:
وَ رَحۡمَتِیۡ وَسِعَتۡ كُلَّ شَیۡءٍ ؕ فَسَاَكۡتُبُهَا لِلَّذِیۡنَ یَتَّقُوۡن
আর আমার রহমত সব বিষয়ে পরিব্যাপ্ত আর তা আমি তাদের জন্য লিখে দিব যারা তাক্বওয়া অবলম্বন করবে (আরাফ: ১৫৬)
১০. আল্লাহ তাদের বেশি ভালোবাসেন:
وَ اتَّقٰی فَاِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ الۡمُتَّقِیۡنَ
তাকওয়া অবলম্বন করে, তবে নিশ্চয় আল্লাহ মুত্তাকীদেরকে ভালবাসেন (আলে ইমরান: ৭৬)
১১. তাদের ভয় ও চিন্তার কোন কারন নেই:
الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ كَانُوۡا یَتَّقُوۡنَ - اَلَاۤ اِنَّ اَوۡلِیَآءَ اللّٰهِ لَا خَوۡفٌ عَلَیۡهِمۡ وَ لَا هُمۡ یَحۡزَنُوۡنَ
জেনে রেখ! আল্লাহর বন্ধুদের কোন ভয় নেই আর তারা দুঃখিতও হবে না। যারা ঈমান আনে আর তাকওয়া অবলম্বন করে (ইউনূস:৬২-৬৩)
১২. তাদের জন্য আসমান জমিনের সকল কল্যাণ উন্মুক্ত হবে:
وَ لَوۡ اَنَّ اَهۡلَ الۡقُرٰۤی اٰمَنُوۡا وَ اتَّقَوۡا لَفَتَحۡنَا عَلَیۡهِمۡ بَرَكٰتٍ مِّنَ السَّمَآءِ وَ الۡاَرۡض
জনপদগুলোর লোকেরা যদি ঈমান আনত আর তাক্বওয়া অবলম্বন করত তাহলে আমি তাদের জন্য আসমান আর যমীনের কল্যাণ উন্মুক্ত করে দিতাম (আরাফ: ৯৬)
১৩. শয়তানের অনিষ্ট থেকে বাঁচতে পারে:
إِنَّ الَّذِينَ اتَّقَوْا إِذَا مَسَّهُمْ طَائِفٌ مِّنَ الشَّيْطَانِ تَذَكَّرُوا فَإِذَا هُم مُّبْصِرُونَ
যাদের মনে ভয় রয়েছে, তাদের উপর শয়তানের আগমন ঘটার সাথে সাথেই তারা সতর্ক হয়ে যায় এবং তখনই তাদের বিবেচনাশক্তি জাগ্রত হয়ে উঠে। (সূরা আরাফঃ ২০১)
১৪. তারা বেহেশতে থাকবে:
إِنَّ الْمُتَّقِينَ فِي مَقَامٍ أَمِينٍ
নিশ্চয়ই খোদাভীরুরা নিরাপদ স্থানে থাকবে। ( সূরা দুখানঃ ৫১)
১৫. মুত্তাকীদের জন্যই জান্নাত তৈরি করা হয়েছে:
وَسَارِعُوا إِلَىٰ مَغْفِرَةٍ مِّن رَّبِّكُمْ وَجَنَّةٍ عَرْضُهَا السَّمَاوَاتُ وَالْأَرْضُ أُعِدَّتْ لِلْمُتَّقِينَ
তোমরা তোমাদের পালনকর্তার ক্ষমা এবং জান্নাতের দিকে ছুটে যাও যার সীমানা হচ্ছে আসমান ও যমীন, যা তৈরী করা হয়েছে পরহেযগারদের জন্য। (সূরা আলে ইমরানঃ ১৩৩)
১৬. জান্নাতে তাদের জন্য থাকবে পরিপূর্ণ নেয়ামত:
لِلَّذِينَ اتَّقَوْا عِندَ رَبِّهِمْ جَنَّاتٌ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَأَزْوَاجٌ مُّطَهَّرَةٌ وَرِضْوَانٌ مِّنَ اللَّهِ
যারা পরহেযগার, আল্লাহর নিকট তাদের জন্যে রয়েছে বেহেশত, যার তলদেশে প্রস্রবণ প্রবাহিত-তারা সেখানে থাকবে অনন্তকাল। আর রয়েছে পরিচ্ছন্ন সঙ্গিনীগণ এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি। (সূরা আলে ইমরানঃ ১৫)
১৭. মুত্তাকীরা হবে জান্নাতের উত্তারাধীকারী:
تِلۡكَ الۡجَنَّۃُ الَّتِیۡ نُوۡرِثُ مِنۡ عِبَادِنَا مَنۡ كَانَ تَقِیًّا
এটা ঐ জান্নাত যার অধিকারী করব আমার বান্দাদের মধ্যে মুত্তাকীদের। (সূরা মরিয়ামঃ ৬৩)
১৮. জান্নাতকে তাদের নিকটবর্তী করা হবে:
وَأُزْلِفَتِ الْجَنَّةُ لِلْمُتَّقِينَ
জান্নাত আল্লাহভীরুদের নিকটবর্তী করা হবে। (সূরা শুয়ারাঃ ৯০)
১৯. আল্লাহ তাদের জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিবেন:
ثُمَّ نُنَجِّي الَّذِينَ اتَّقَوا وَّنَذَرُ الظَّالِمِينَ فِيهَا جِثِيًّا
অতঃপর আমি পরহেযগারদেরকে উদ্ধার করব এবং জালেমদেরকে সেখানে নতজানু অবস্থায় ছেড়ে দেব। (সূরা মারইয়ামঃ ৭২)
২০. কেয়ামতের দিন মুত্তাকীরা ছাড়া সকল বন্ধু শত্রুতে পরিণত হবে:
الْأَخِلَّاءُ يَوْمَئِذٍ بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ عَدُوٌّ إِلَّا الْمُتَّقِينَ
বন্ধুবর্গ সেদিন একে অপরের শত্রু হবে, তবে খোদাভীরুরা নয়। ( সূরা যুখরুফঃ ৬৭)
২১. মুত্তাকীদের জন্য জান্নাতে থাকবে চার ধরণের নহর:
مَّثَلُ الْجَنَّةِ الَّتِي وُعِدَ الْمُتَّقُونَ ۖ فِيهَا أَنْهَارٌ مِّن مَّاءٍ غَيْرِ آسِنٍ وَأَنْهَارٌ مِّن لَّبَنٍ لَّمْ يَتَغَيَّرْ طَعْمُهُ وَأَنْهَارٌ مِّنْ خَمْرٍ لَّذَّةٍ لِّلشَّارِبِينَ وَأَنْهَارٌ مِّنْ عَسَلٍ مُّصَفًّى ۖ وَلَهُمْ فِيهَا مِن كُلِّ الثَّمَرَاتِ وَمَغْفِرَةٌ مِّن رَّبِّهِمْ
মুত্তাকীদেরকে যে জান্নাতের ওয়াদা দেয়া হয়েছে, তার অবস্থা নিম্নরূপঃ তাতে আছে পানির নহর, নির্মল দুধের নহর যারা স্বাদ অপরিবর্তনীয়, পানকারীদের জন্যে সুস্বাদু শরাবের নহর এবং পরিশোধিত মধুর নহর। তথায় তাদের জন্যে আছে রকমারি ফল-মূল ও তাদের পালনকর্তার ক্ষমা। (সূরা মুহাম্মদঃ ১৫)
২২. পার্থিব জগতে আল্লাহর সাথীত্ব অর্জন:
[সূরা হাদীদ: (৪)]
[সূরা মুজাদিলা: (৭)]
[সূরা তাওবা: (৪০)]
[সূরা নাহল: (১২৮)]
[সূরা বাকারা: (১৯৪)]
২৩. শুভ পরিণতি বা শেষ ফল লাভ:
[সূরা ত্বহা: (১৩২)]
[সূরা সাদ: (৪৯)]
[সূরা হুদ: (৪৯)]
আল হাদিসের আলোকে:
১. নবী করীম (সা.) দোয়া:
তিনি মানুষকে বিদায় দেওয়ার সময় বলতেন,
أَسْتَوْدِعُ اللهَ دِينَكَ وَأَمَانَتَكَ وآخِرَ عَمَلِكَ وَزَوَّدَكَ اللهُ التَّقْوَى وَغَفَرَ ذَنْبَكَ وَيَسَّرَ لَكَ الْخَيْرَ حَيْثُمَا كُنْتَ-
‘আমি তোমার দ্বীন, তোমার আমানত ও তোমার শেষ কর্মকে আল্লাহর নিকট গচ্ছিত রাখলাম। আল্লাহ তোমাকে তাকওয়া দান করুন। আল্লাহ তোমার গোনাহ মাফ করুন এবং আল্লাহ তোমার জন্য কল্যাণকে সহজ করে দিন তুমি যেখানেই থাক’ (আবু দাউদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/২৩২৪)।
২. জান্নাতে প্রবেশের মাধ্যম:
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أتَدْرُوْنَ مَا أَكْثَرُ مَا يُدْخِلُ النَّاسَ الْجَنَّةَ فَقَالَ تَقْوَى اللهِ وَحُسْنُ الْخُلُقِ، أتَدْرُوْنَ مَا أَكْثَرُ مَا يُدْخِلُ النَّاسَ النَّارَ فَقَالَ الْفَمُ وَالْفَرْجُ-
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন তোমরা কি জান কোন জিনিস মানুষকে সবচেয়ে বেশী জান্নাতে প্রবেশ করায়? তা হচ্ছে আল্লাহর ভয় বা তাক্বওয়া ও উত্তম চরিত্র। তোমরা কি জান মানুষকে সবচেয়ে বেশী জাহান্নামে প্রবেশ করায় কোন জিনিস? একটি মুখমণ্ডল ও অপরটি লজ্জাস্থান’ (তিরমিযী, মিশকাত হা/৪৬২১)।
৩. ভদ্রতার মাধ্যমে তাকওয়া প্রকাশ পায়:
عَنِ الْحَسَنِ عَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدَبٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْحَسَبُ الْمَالُ وَالْكَرَمُ التَّقْوَى-
হাসান বসরী সামুরা ইবনু জুনদুব (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মান-মর্যাদা হল ধন-সম্পদ। আর ভদ্রতা-নম্রতা হল তাক্বওয়া অবলম্বন করা’ (তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/৪৬৪৮)।
৪. তাকওয়াবান ছাড়া অন্য কাউকে খাওয়নো নিষেধ:
عَنْ أَبِيْ سَعِيْدٍ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ لاَ تُصَاحِبْ إِلاَّ مُؤْمِنًا وَلاَ يَأْكُلْ طَعَامَكَ إِلاَّ تَقِيٌّ-
আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি নবী করীম (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, ‘ঈমানদার ছাড়া কাউকে সাথী কর না। আর পরহেযগার ব্যতীত কেউ যেন তোমার খাদ্য না খায়’ (তিরমিযী, আবু দাউদ, মিশকাত হা/৪৭৯৮)।
৫. তাকওয়া হলো মর্যাদার মাপকাঠি:
عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ أَنْسَابَكُمْ هَذِهِ لَيْسَتْ بِمُسَّبَةٍٍ عَلَى أَحَدٍ كُلُّكُمْ بَنِيْ آدَمَ طَفُّ الصَّاعِ بِالصَّاعِ لَمْ تَمْلَئُوهُ لَيْسَ لِأَحَدٍ فَضْلٌ إِلَّا بِالدِّينِ وَالتَّقْوَى كَفَى بِالرَّجُلِ أَنْ يَكُونَ بَذِيًّا فَاحِشًا بَخِيلاً-
উক্ববা ইবনু আমের (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের বংশ পরিচয় এমন কোন বস্ত্ত নয় যে, তার কারণে তোমরা অন্যকে গালমন্দ করবে। তোমরা সকলেই আদমের সন্তান। দাড়িপাল্লার উভয় দিক যেমন সমান থাকে, যখন তোমরা পূর্ণ করনি। দ্বীন ও তাক্বওয়া ছাড়া একজনের উপর আর একজনের কোন মর্যাদা নেই। তবে কোন ব্যক্তির মন্দ হওয়ার জন্য অশ্লীল বাকচারী ও কৃপণ হওয়াই যথেষ্ট’ (আহমাদ, মিশকাত হা/৪৬৯৩)।
৬. তাকওয়া হলো মর্যাদার মাপকাঠি:
عَنْ أَبِيْ ذَرٍّ قَالَ قَالَ لِيْ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اتَّقِ اللهَ حَيْثُمَا كُنْتَ وَأَتْبِعْ السَّيِّئَةَ الْحَسَنَةَ تَمْحُهَا-
আবু যার (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাকে বলেছেন, ‘তুমি যেখানে যেভাবে থাকবে আল্লাহকে ভয় করবে বা তাক্বওয়া অবলম্বন করবে। কোন কারণ বশত পাপ কাজ হয়ে গেলে তারপর ভাল কাজ করবে। তা তোমার পাপকে মিটিয়ে দিবে’ (তিরমিযী, মিশকাত হা/৫০৮৩)
৭. রাসুল নিজে তাকওয়াবান হওয়ার দু’আ করতেন:
عَنْ عَبْدِ اللهِ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ اللهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْهُدَى وَالتُّقَى وَالْعَفَافَ وَالْغِنَى-
আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) বলতেন, হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট সহজ-সরল সঠিক পথ চাই। তোমার নিকট পরহেযগারিতা চাই। হারাম হতে বেঁচে থাকতে চাই এবং অন্যের নিকট মুখাপেক্ষী হওয়া হতে বেঁচে থাকতে চাই’ (মুসলিম, মিশকাত হা/২৩৭০)।
৮. তাকওয়া হলো মর্যাদার মাপকাঠি:
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: " ثَلَاثٌ مُنْجِيَاتٌ وَثَلَاثٌ مُهْلِكَاتٌ فَأَمَّا الْمُنْجِيَاتُ: فَتَقْوَى اللهِ فِي السِّرِّ والعلانيةِ والقولُ بِالْحَقِّ فِي الرِّضَى وَالسَّخَطِ وَالْقَصْدُ فِي الْغِنَى وَالْفَقْرِ. وَأَمَّا الْمُهْلِكَاتُ: فَهَوًى مُتَّبَعٌ وَشُحٌّ مُطَاعٌ وَإِعْجَابُ الْمَرْءِ بِنَفْسِهِ وَهِيَ أَشَدُّهُنَّ.
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, তিনটি কাজ মানুষকে রক্ষা করে এবং তিনটি কাজ মানুষকে ধ্বংস করে। রক্ষাকারী কাজ তিনটি হচ্ছে- (১) প্রকাশ্যে ও গোপনে আল্লাহকে ভয় করা (২) সন্তুষ্টি ও অসন্তুষ্টিতে হক কথা বলা এবং (৩) সচ্ছলতায় ও অসচ্ছলতায় মধ্যম পন্থা অবলম্বন করা। আর ধ্বংসকারী কাজ তিনটি হচ্ছে- (১) প্রবৃত্তির অনুসরণ করা (২) কৃপণতাকে মেনে নেওয়া এবং (৩) আত্ম-অহংকার করা। আর এটিই হচ্ছে সবচেয়ে কঠিন (বায়হাক্বী, মিশকাত হা/৫১২২)।
তাকওয়ার মৌলিক বিষয়
তাক্বওয়ার মৌলিক বিষয় হচ্ছে তিনটি। যথাঃ-
১. শিরক হতে বিরত থাকার মাধ্যমে নির্দিষ্ট শাস্তি হতে আত্নরক্ষা করা।
২. গুনাহ থেকে দূরে থাকা।
৩. এমন কাজ থেকে দূরে থাকা, যা আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফিল করে দেয়।
তাকওয়ার স্তরসমূহ:
ইমাম গাযযালী (রঃ) গুণগত ও মানগত দিক দিয়ে তাক্বওয়াকে চারটি স্তরে বিভক্ত করেছেন। যথাঃ-
১. শরীআত কর্তৃক নির্ধারিত হারাম থেকে বিরত থাকা। এ শ্রেণীর মুত্তাকীকে مؤمن ‘মু’মিন’ বলে।
২. সন্দেহযুক্ত হালাল বস্তু পরিত্যাগ করা। এ শ্রেণীর মুত্তাকীকে صلحا ‘সুলাহা’ বলা হয়।
৩. আল্লাহর ভয়ে অপ্রয়োজনীয় হালাল বস্তু বর্জন করা। এ শ্রেণীর মুত্তাকীকে اتقياء ‘আতক্বিয়া’ বলা হয়।
৪. যে সকল হালাল বস্তু আল্লাহর ইবাদতে সহায়তা করে না তা বর্জন করা। এ শ্রেণীর মুত্তাকীকে صديقين ‘সিদ্দীক্বীন’ বলা হয়।
আল্লামা রাগিব ইস্পাহানী পরহিযগারিতাকে তিনটি স্তরে বিন্যাস করেছেন। যথাঃ-
১। ওয়াজিবঃ সকল প্রকার হারাম থেকে বেঁচে থাকা। এ প্রকারের পরহিযগারিতা অর্জন করা সকল মানুষের উপর ওয়াজিব।
২। মুস্তাহাবঃ সন্দেহপূর্ণ বস্তুসমূহ থেকে বেঁচে থাকা। মধ্যম স্তরের পরহিযগার ব্যক্তিদের জন্য এ স্তরটি প্রযোজ্য।
৩। মাফযূলঃ অনেক মুবাহ এবং স্বল্প প্রয়োজনীয় বস্তু সমূহ থেকেও বিরত থাকা। নবী-রাসূল, শহীদ এবং সালিহ বান্দাদের জন্য এ স্তরটি প্রযোজ্য।’’
[আয-যারী’আহ ইলা মাকারিমিশ শারী’আহ, (কায়রো : দারুস সালাম, ২০০৭), পৃ. ২২৭]
তাকওয়ার সর্বোচ্চ স্তর:
আল্লাহ ভীতির সর্বোচ্চ স্তর হল না-জায়েয কাজে জড়িয়ে পরার ভয়ে কোন কোন জায়েয কাজও পরিত্যাগ করা। তাই তো রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: الحَلاَلُ بَيِّنٌ وَالحَرَامُ بَيِّنٌ، وَبَيْنَ ذَلِكَ أُمُورٌ مُشْتَبِهَاتٌ، لاَ يَدْرِي كَثِيرٌ مِنَ النَّاسِ أَمِنَ الحَلاَلِ هِيَ أَمْ مِنَ الحَرَامِ، فَمَنْ تَرَكَهَا اسْتِبْرَاءً لِدِينِهِ وَعِرْضِهِ فَقَدْ سَلِمَ، وَمَنْ وَاقَعَ شَيْئًا مِنْهَا، يُوشِكُ أَنْ يُوَاقِعَ الحَرَامَ (ترمذى
“হালাল সুস্পষ্ট, হারামও সুস্পষ্ট । আর এদুইয়ের মাঝখানে রয়েছে কিছু সন্দেহজনক জিনিস। অধিকাংশ লোকেরা অবগত নয় যে এগুলো হালাল নাকি হারাম। কাজেই যে ব্যক্তি এসব সন্দেহজনক জিনিস থেকে দূরে থাকল, সে তার দ্বীন ও ইজ্জতকে হিফাযত করল। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি সন্দেহজনক বিষয়ে জড়িয়ে পড়ল, সে হারামের মধ্যে ফেঁসে গেল।’’ [তিরমিযীঃ ১২০৫]
তাকওয়ার মূল বৈশিষ্ট্য:
তাক্বওয়ার মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ছয়টি। যথাঃ-
১. تفتيش الحق ‘‘ তাফতীশুল হাক্ব” তথা সত্যের অনুসন্ধান। সত্য উপলব্ধি ও প্রকৃত সত্য প্রাপ্তির জন্য চিন্তা গবেষণা করা।
২.قبول الحق “সত্য গ্রহণ।” প্রকৃত সত্য সন্ধানের পর সত্যের উপলদ্ধি ও সত্য প্রাপ্তির সাথে নির্দ্বিধায়, নিঃসংকোচে সত্যকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে গ্রহণ করা।
৩.استقامة علي الحق “আপোষহীনভাবে সত্যের উপর সুদৃঢ় থাকা।” নিষ্ঠা ও দৃঢ়তার সাথে সত্যকে গ্রহণ করে তার উপর সুপ্রতিষ্ঠিত থাকা। লোভ-লালসা ও সুযোগ সুবিধা ভোগ অথবা অত্যাচার নির্যাতনের কারণে সত্যকে পরিহার না করা।
৪.خوف الهي “আল্লাহভীতি।” আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের লক্ষ্যে প্রতিমুহুর্তে আল্লাহর নিকট জবাবদিহিতার চেতনায় উদ্ধুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত হয়ে আল্লাহকে ভয় করা।
৫.احساس الذمة “দায়িত্ব সচেতনতা।” আল্লাহ প্রদত্ত দায়িত্ব সম্পর্কে সদা সচেতন ও সতর্ক থাকা।
৬.اداء الفرائض “কর্তব্য পালন।” আল্লাহ প্রদত্ত কর্তব্যসমূহ যথাযথভাবে আদায় করা।
তাকওয়া অর্জনের ফলাফল :
১. আল্লাহর সাহায্য ও নৈকট্য পাওয়া যায়।
২. শেষ পরিণাম ভালো হয়।
৩. উত্তম প্রতিদান পাওয়া যায়।
৪. সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধি পায়।
৫. দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা অর্জিত হয়।
তাকওয়া অর্জনের উপায়:
১. ওহী-ভিত্তিক জ্ঞান:
এ জ্ঞানে আল্লাহ তা‘আলার পূর্ণ পরিচয় সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। আর তখনই অন্তরে আল্লাহর ভয় জাগ্রত হয়।
إِنَّمَا يَخْشَى اللَّهَ مِنْ عِبَادِهِ الْعُلَمَاء
“বান্দাদের মধ্য থেকে তারাই আল্লাহ তা‘আলাকে বেশি ভয় করে যারা জ্ঞানী।’’-সূরা ফাতিরঃ ২৮
২. আল্লাহ ভীরুদের সাহচর্য:
মানুষ তার সঙ্গীর আদর্শে প্রভাবিত হয়। কাজেই সহচর্য যদি সৎ ও আল্লাহভীরু হয় তাহলে তার মধ্যে অলক্ষ্যে তাকওয়ার গুণ সৃষ্টি হবে।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اتَّقُواْ اللّهَ وَكُونُواْ مَعَ الصَّادِقِينَ
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাও।’’ -সূরা তাওবা- ১১৯
৩. আল্লাহভীরু পিতামাতা:
পিতা মাতা আল্লাহভীরু হলে সন্তানও অধিকাংশ ক্ষেত্রে আল্লাহভীরু হতে বাধ্য। তাই তো রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنهُ كَانَ يحدث قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَا مِنْ مَوْلُودٍ إِلَّا يُولَدُ عَلَى الْفِطْرَةِ فَأَبَوَاهُ يُهَوِّدَانِهِ أَوْ يُنَصِّرَانِهِ أَوْ يُمَجِّسَانِهِ كَمَا تُنْتَجُ الْبَهِيمَةُ بَهِيمَةً جَمْعَاءَ هَلْ تُحِسُّونَ فِيهَا مِنْ جَدْعَاءَ ثُمَّ يَقُول أَبُو هُرَيْرَة رَضِي الله عَنهُ (فطْرَة الله الَّتِي فطر النَّاس عَلَيْهَا) الْآيَة) مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
“প্রত্যেক সন্তানই ফিতরতের উপর জন্ম গ্রহণ করে। অতঃপর তার পিতামাতা নিজেদের সংস্রব দ্বারা তাকে ইয়াহুদী, খৃষ্টান বা অগ্নি উপাসকে পরিণত করে। যেমন পশুরা পূর্ণাঙ্গ পশু শাবকই প্রসব করে, তাতে তোমরা কোন একটিকেও কান কাটা দেখ কি? (বরং পরে মানুষেই কান কেটে ও নাক ছেদিয়ে সেগুলোকে বিকলাঙ্গ করে দেয়)।’’ -বুখারী; মুসলিম; মিশকাতঃ ৯০
৪. আল্লাহকে কর্মবিধায়ক মনে করা:
وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ
“তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং জেনে রেখ তিনি তোমাদের সকল কর্ম সম্পর্কে জ্ঞাত রয়েছেন।’’ -সূরা হাশরঃ ১৮
৫. আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে চলা (ইবাদত করা):
দৈহিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে আল্লাহর আদেশ পালন ও নিষেধাজ্ঞা বর্জনে কাজে লাগাতে পারলে মনে আল্লাহর ভয় জাগ্রত হয়।
يَا أَيُّهَا النَّاسُ اعْبُدُواْ رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُمْ – وَالَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ
“হে মানব সমাজ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তার ইবাদত কর, যিনি তোমাদিগকে এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদিগকে সৃষ্টি করেছেন। তাতে আশা করা যায়, তোমরা পরহিযগারী অর্জন করতে পারবে।’’ -সূরা বাকারাঃ ২১
তাকওয়া অর্জনের কিছু প্র্যাকটিক্যাল কনসেপ্ট:
১. শেষ রাতের তাহাজ্জুদের অভ্যাস করা।
২. দৈনন্দিন প্রতিটি কাজে ব্যবহৃত দু’আ সমূহ পাঠ করা।
৩. অর্থসহ কুরআন তেলাওয়াত করা, তেলাওয়াত শুনা।
৪. প্রতিদিনের বদ অভ্যাসগুলো আত্মসমালোচনার মাধ্যমে চিহ্নিত করে দূর করা।
৫. যে সমস্ত লোকদের সাথে একসাথ হলে গীবত, পরনিন্দা ও খারাপ আলোচনা হতে পারে তাদের এভোয়েট করে চলা।
৬. পোশাক পরিচ্ছদ (চুল, নখ) সুন্নাহ তরীকা অবলম্বন করা।
৭. নিজের সালাত সুন্দর ও ধীর স্থীর করা।
৮. নিজের ব্যক্তিগত আমল যথাসম্ভব গোপনে করা। (নফল রোযা)
৯. মহৎ ও তাকওয়াবান লোকদের জীবনী জানা।
১০. আল্লাহ আযাব ও গযবের ঘটনাগুলো বারবার অধ্যয়ন করা।
১১. চক্ষু ও লজ্জাস্থানের হেফাজত করা।
১২. পারতপক্ষে এক মুহূর্তও একাকী না থাকা।
১৩. মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যবহারে সতর্ক থাকা।
১৪. ভালো কাজের প্রতিযোগীতা করা।
১৫. আল্লাহর সামনে দাঁড়ানোর ভয় করা।
তাকওয়া অর্জনের পথে অন্তরায়:
১. সীরাতের চেয়ে সুরুতের প্রাধান্য দেয়া।
২. নিজেকে যেকোন জায়গায় বড় করে উপস্থাপন।
৩. লোক দেখানো আমল করা।
৪. চোখের হেফাজত/দৃষ্টি সংযত করতে না পারা।
৫. নফসের গোলামী করা।
৬. সময়ের অপচয় করা।
৭. ইবাদতে এখলাস না থাকা।
আমাদের হতে হবে:
১. একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাজ করা।
২. জাহেলিয়াত থেকে পুরোপুরি সম্পর্ক ছিন্ন করা।
৩. নিজেকে ছোট করে উপস্থাপন করা।
৪. বেশি কাঁদা, কম হাসা।
৫. আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করা।